আলহামদুলিল্লাহ।
তথ্য ও প্রযুক্তির এই যুগে আমাদের প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদরাসা -এর নিজস্ব ওয়েবসাইটের আত্মপ্রকাশ নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে তথ্যপ্রযুক্তিকে শিক্ষাক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত করা এখন সময়ের দাবি এবং এই ওয়েবসাইট সেই পথচলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আমাদের প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি, শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন তথ্য, একাডেমিক কার্যক্রম, ফলাফল, নোটিশসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় সহজেই অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানতে পারবে। এতে শিক্ষায় স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা এবং গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

আমি এই মহৎ উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল শিক্ষক, কর্মচারী, প্রযুক্তিবিদ ও সহযোগীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আশা করি, এই ওয়েবসাইট আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদরাসাটি গোটা দেশের জন্য একটি মডেল মাদরাসা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে—এই কামনায় আমি এই ওয়েবসাইটের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করছি।

চেয়ারম্যান
গভর্ণিং বডি,
শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদরাসা

মাওলানা মো. লুৎফুর রহমান হুমায়দী: ১৯৬৫ সালের ৩০ নভেম্বর সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার (তৎকালীন ছাতক থানা) মংগলপুর (গাজী নগর) গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পিতা মরহুম মাস্টার মো. মফিজুর রহমান এবং মাতা নূর জাহান বেগমের প্রথম সন্তান।

পিতা ছিলেন সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। পিতার হাত ধরে সেই স্কুলেই তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু। ১৯৭৬ সালে সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে টেলেন্টপুল বৃত্তি লাভ করেন। এরপর তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ফুলবাড়ী আজিরিয়া সিনিয়র মাদরাসায়। সেখান থেকে ১৯৮৩ সালে দাখিল পরীক্ষায় মাদরাসা বোর্ডের সম্মিলিত মেধাতালিকায় ৭ম স্থান, ১৯৮৫ সালে আলিম পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগের মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান অধিকারসহ কৃতিত্বের সাথে ফাজিল পাশ করেন। ১৯৮৯ সালে সুনামের সাথে কামিল পাশ করেন ঢাকার বিখ্যাত “তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা” থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি অনার্সে ১ম বর্ষ সমাপ্ত করলেও চাকরি জীবন শুরু হয়ে যাওয়ায় তা কন্টিনিউ করেননি। “সিলেট সরকারি এম.সি কলেজ থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে ১৯৯০ সালে ডিগ্রি এবং ১৯৯৫ সালে মেধা তালিকায় স্থানসহ ১ম বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।

মাওলানা হুমায়দী সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন লোভনীয় চাকরীর সুযোগ উপেক্ষা করে ইলমে দ্বীনের একজন খাদিম হিসেবে মাদরাসায় শিক্ষকতার পেশাকেই নিজের জীবনের ব্রত হিসেবে বাছাই করে নেন।

১৯৮৯ সালের ১লা অক্টোবর অস্থায়ীভাবে যোগদানের মাধ্যমে সিলেট শহরের শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদরাসায় শুরু হয় তার শিক্ষকতার জীবন। ১৯৯০ সালে জামেয়ায় আরবি প্রভাষক হিসেবে যোগদান, ১৯৯৫ সালে উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ, ১৯৯৮ সালে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে এবং ২০০০ সাল থেকে অদ্যাবধি সুনামের সাথে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ইসলামের সুমহান আদর্শ এবং শিক্ষা, সমাজ, সংস্কৃতি নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে তার ৫০ টির মতো প্রবন্ধ, নিবন্ধ এবং উপসম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে। কবিতা, সংগীত এবং ছোটগল্প রচনায়ও তার রয়েছে সমান হাত। বাংলা, ইংরেজি, আরবি, ইসলাম শিক্ষাসহ শিশু কিশোরদের উপযোগী তার লেখা ২০টি পাঠ্যবই দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

মাওলানা হুমায়দী একজন ইসলামী চিন্তাবিদ হিসেবে বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, তাফসীর মাহফিল ইত্যাদিতে নিয়মিত আলোচনা পেশ করে থাকেন। ইসলামী সাহিত্য হিসেবে তার রচিত দুটি গ্রন্থ ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।
১. প্রশান্তির ঝর্ণাধারা
২. বিপর্যয়ের অন্তরালে

মাওলানা সৈয়দ ফয়জুল্লাহ বাহার একজন শিক্ষাবিদ, সংগঠক‌ ও সমাজকর্মী। শিক্ষাকে তিনি নিয়েছেন একটি মিশন ও ভিশন হিসেবে। ২০০৬ সাল থেকে তিনি শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা পাঠানটুলা, সিলেট- এ তিনি উপাধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ১৯৯৭ সালের আগস্টে জামেয়ায় আরবি প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন এবং ২০০৪ সাল থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মাওলানা সৈয়দ ফয়জুল্লাহ বাহার ছাত্রজীবনে সকল পরীক্ষায় মেধা ও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন। তিনি ১৯৯০ সালে তৎকালীন কানাইঘাট মনসুরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে ১ম বিভাগে দাখিল, ১৯৯২ সালে তৎকালীন শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ৪র্থ স্থান অর্জন করে ১ম বিভাগে আলিম, ১৯৯৪ সালে ফতেহপুর তায়ীদুল ইসলাম সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে ১ম বিভাগে ফাজিল এবং ১৯৯৬ সালে নরসিংদীর জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদরাসা থেকে ১ম বিভাগে স্টার মার্কস পেয়ে কামিল পাশ করেন। ১৯৯৩-৯৪ শিক্ষাবর্ষে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগে স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে অধ্যয়ন করেন।

পরবর্তীতে তিনি কর্মজীবনে এসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ম বিভাগে কৃতিত্বের সাথে স্নাতক উত্তীর্ণ হন। জনাব সৈয়দ ফয়জুল্লাহ বাহার ২০০৩-২০০৪ সেশনে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর সরকার ও রাজনীতি বিভাগে মাষ্টার্স কোর্সে লেখাপড়া করেন। ২০২১ সালে তিনি সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটি থেকে কৃতিত্বের সাথে ব্যবসায় অনুষদ থেকে মাস্টার্স (এমবিএ) পাশ করেন।

শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। তিনি সিলেট উপশহরে অবস্থিত সানিহিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ ও সিলেট আইডিয়াল মাদ্রাসার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক।